ফায়ারিং স্কোয়াডে মৃত্যুদণ্ডের সেই রায়

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় বিচারিক আদালত বরখাস্ত লে.কর্নেল সৈয়দ ফারুক রহমান, অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেল সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খানসহ ১৫ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলো।

১৯৯৮ সালের ৮ই নভেম্বর দেওয়া ওই রায়ে ফায়ারিং স্কোয়াডে তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার নির্দেশ দিয়ে বলা হয়েছিলো, এভাবে কার্যকরে কর্তৃপক্ষের কোন অসুবিধা থাকলে প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তা কার্যকর করা যাবে।

তৎকালীন ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ গোলাম রসুল এই রায় দেন। আদালত সাবেক প্রতিমন্ত্রী প্রয়াত তাহেরউদ্দিন ঠাকুরসহ চার আসামিকে খালাস দেয়।

রায়ে মৃত্যৃদণ্ড পাওয়া অন্য আসামিরা হলেন- অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ (আর্টিলারী), পলাতক লে. কর্নেল আবদুর রশিদ, পলাতক মেজর বজলুল হুদা (বর্তমানে বন্দি), পলাতক বরখাস্ত লে. কর্নেল শরিফুল হক ডালিম, অবসরপ্রাপ্ত মেজর শরিফুল হোসেন ওরফে শরফুল হোসেন, অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেল এ এম রাশেদ চৌধুরী, অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ (ল্যান্সার/ বর্তমানে বন্দি), অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেল এস এইচ এম বি নূর চৌধুরী, অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেল আবদুল আজিজ পাশা (প্রয়াত), ক্যাপ্টেন মো. কিসমত হাশেম, অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন নাজমুল হোসেন আনসার, অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন আবদুল মাজেদ, রিসালদার মোসলেমউদ্দিন ওরফে মোসলেহউদ্দিন।

রায়ের আদেশে বলা হয়, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোর ৫টার দিকে ধানমণ্ডির নিজ বাসভবনে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু, তার পরিবারের সদস্য, আত্মীয়স্বজন ও অন্যদের ষড়যন্ত্র ও পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গুলি করে হত্যা করার অপরাধে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

রায়ে আরো বলা হয়, "ঘটনার পর কোনো কোনো আসামি দেশ-বিদেশে নিজেদের আত্মস্বীকৃত খুনি হিসেবেও পরিচয় দিয়ে দাম্ভিকতা প্রকাশ করে। ঘটনাটি কেবল নৃশংস নয়, এই অপরাধ এমন একটি ক্ষতির কার্য যা শুধু ব্যক্তি বিশেষের জন্য নয়, বরং সমাজ ও রাষ্ট্রের পক্ষেও এটা মারাত্মক ক্ষতি। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ভয়াবহ পরিণতির বিষয় স্বজ্ঞানে তারা ষড়যন্ত্রমূলক ও পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।"

"সুতরাং, তাদের প্রতি কোনো প্রকার সহানুভূতি ও অনুকম্পা প্রদর্শনের যুক্তি নেই। এই অনুকম্পা পাওয়ার কোনো যোগ্যতাও তাদের নেই। তাদের অপরাধের জন্য তাদের প্রত্যেককে দণ্ডবিধি ৩০২/৩৪ ধারা মতে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলো।"

রায়ে আসামি তাহের উদ্দিন ঠাকুর, অনারারি ক্যাপ্টেন আবদুল ওহাব জোয়ারদার, দফাদার মারফত আলী ও এল ডি আবুল হাশেম মৃধার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয় নি বলে তাদের অভিযোগের দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।