আমড়া একটি সুপরিচিত ও জনপ্রিয় দেশীয় ফল। আমড়াতে রয়েছে অনেক পুষ্টি যা প্রায় তিনটি আপেলের পুষ্টির সমান। আপেলের চাইতে আমড়াতে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম ও আয়রনের পরিমাণ বেশি রয়েছে। পুষ্টি বিজ্ঞানীদের মতে, প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্যোপযোগী আমড়াতে যেসব পুষ্টি উপাদান রয়েছে তা হলো- শর্করা ১৫ গ্রাম, আমিষ ১.১ গ্রাম, চর্বি ০.১ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৫৫ মিলিগ্রাম, আয়রন ৩.৯ মিলিগ্রাম, ক্যারোটিন ৮০০ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন বি১০.২৮ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি২ ০.০৪ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি৯২ মিলিগ্রাম, অন্য খনিজ পদার্থ ০.৬ গ্রাম, খাদ্যশক্তি ৬৬ কিলোক্যালরি।
আমড়া ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল। ভিটামিন সি দেহের জন্য একটি অতি প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান। এর অভাবে স্কার্ভি রোগ হয়। এ রোগে দাঁতের মাড়ি ফুলে যায়, দাঁতের গোড়া থেকে পুঁজ ও রক্ত পড়ে, মাড়িতে প্রচণ্ড ব্যথা হয়, খাবার খেতে অসুবিধা হয়, অকালে দাঁত ঝরে যায়। বিভিন্ন প্রকার ভাইরাস ইনফেকশন, সর্দি কাশি ও ইনফ্লুয়েঞ্জায় ভিটামন সি অত্যন্ত উপকারী। ক্যালসিয়ামের অভাবে মাংশপেশিতে খিঁচুনি হয়, শিশুদের দৈহিক গঠন দুর্বল হয়। আমড়াতে প্রচুর আয়রন থাকায় রক্ত স্বল্পতায় খেলে এর অভাব পূরণ হয়। আমড়ার পুষ্টিগুণ ছাড়াও কিছু ভেষজগুণ রয়েছে। আমড়া পিত্তনাশক ও কফনাশক। আমড়া খেলে অরুচিভাব দূর হয়। মুখে রুচি ফিরে আসে, ক্ষুধা বৃদ্ধি করে। বদহজম ও কোষ্ঠ-কাঠিন্য রোধে আমড়া উপকারী। কাঁচা আমড়া গুঁড়ো মরিচ, লবণ ও মসলা দিয়ে খাওয়া হয় বা অত্যন্ত মুখরোচক এবং এতে ভিটামিন সি পুরোপুরি পাওয়া যায়। আমড়া খেলে পাকস্থলী থাকবে সুস্থ। আমড়ায় থাকা ভিটামিন সি রক্ত জমাট বাঁধার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং খাদ্যে উপস্থিত ভিটামিন এ এবং ই এর সাথে হয়ে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে যা ক্যান্সারসহ নানা ঘাত-প্রতিঘাত থেকে দেহকে রক্ষা করে।