ক্যারিয়ার গড়ুন এনজিওতে

গত ২০০৮- এর এপ্রিল মাসের একটি সংবাদ, “সরকার প্রাথমিক শিক্ষাকে তুলে দিচ্ছে ব্র্যাকের হাতে”। এ সংবাদ আর ngo-for-ngoসরকারের সিদ্ধান্ত জনসম্মুখে প্রকাশ করার পরই শুরু হয় তোলপাড়। তোলপাড় তো হওয়ারই কথা। যেখানে আমাদের জাতীয় শিক্ষার প্রাথমিক স্তরের উন্নতিকল্পে কাজ করবে একটি এনজিও প্রতিষ্ঠান। অবশ্য সরকারেরও যুক্তি ছিল। প্রাথমিক শিক্ষার শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ কারিকুলাম উন্নয়ন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন পরিচালনা করবে ব্র্যাক। এর অর্থায়নও ব্র্যাকই করবে। কারণ আমাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য দাতাসংস্থাগুলো প্রাধান্য দিচ্ছে এনজিওকে। সরকারও এই বাস্তবতাকে সামনে নিয়ে জাতীয় উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে এনজিওগুলোর সম্পৃক্ততা রেখে প্রকল্প করছে। বর্তমানে এ এনজিও চাকরির বাজারে একটি বড় ক্ষেত্র। এ ক্ষেত্রের পরিধি, দক্ষতা ও সম্ভাবনা নিয়েই আমাদের এবারের আয়োজন। জানাচ্ছেন- এসএম মাহফুজ

এনজিও কী

এনজিও একটি ইংরেজি সংক্ষিপ্ত রূপ।
NGO- এর মানে হলো Non-Government Organization. বাংলায় ‘নয় সরকারি সংস্থা’। অর্থাৎ বেসরকারি সংস্থা। সরকার প্রতিষ্ঠা করেনি এমন প্রতিষ্ঠান বা সংস্থাই এনজিও। এনজিওদের নিজস্ব পরিচয় তাদের ভাষায় উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত অমুনাফাভিত্তিক এক ধরনের বিশেষ স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন। সার্বিক উন্নয়নের জন্য সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সাহায্য হতেই যার সূচনা। একবিংশ শতাব্দীর সূচনালগ্নে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রবৃদ্ধি ও কার্যকরণের সম্প্রসারণ ঘটে। এনজিও শুধু জাতীয়ভাবেই নয়, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়েও রয়েছে। দারিদ্র্য দূরীকরণ এবং পল্লী উন্নয়নে কাজ করছে এসব এনজিও।

বাংলাদেশে এনজিও

গোটা বাংলাদেশে জালের মত ছড়িয়ে আছে এনজিও। স্বাধীনতার পর পরই শুরু হয় এনজিও কার্যক্রম। প্রথম দিকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক এনজিওগুলো যুদ্ধ-বিধ্বস্ত এ দেশটির ত্রাণ ও পূনর্বাসন দিয়ে তার কাজ শুরু করে। এরপর এনজিওগুলো গ্রামীণ দরিদ্র জনগণের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তার লক্ষ্যে তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। বাংলাদেশে এত বেশি এনজিও কাজ করে যার সঠিক পরিসংখ্যান কষ্টকর। তবে সমাজসেবা অধিদপ্তরের নিবন্ধন অনুযায়ী ১৬ হাজারেরও অধিক এসব বেসরকারি সংস্থার অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়। ১৯৭০-এর প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ও এর পরবর্তী নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ সিডর ও বিজলি পরবর্তী বিধ্বস্ত বাংলাদেশে পুনর্বাসন কার্যক্রমে এনজিওগুলোর ভূমিকা স্মরণ করার মত। বর্তমানে আর্থিক ভিত্তি ও কর্মসূচির প্রসারতায় এনজিওগুলো দেশের উন্নয়ন প্রক্রিয়ার সরকারের পাশাপাশি তাদের অপরিহার্যতাকে প্রমাণ করেছে। বর্তমানে যেসব এনজিও আমাদের দেশে কাজ করে এর মধ্যে কয়েকটি হলো- ব্র্যাক, আশা, প্রশিকা, অক্সফাম, গ্রামীণ ব্যাংক, সেইভ দ্যা চিলড্রেন, মুসলিম এইড, একশন এইড, এডুকেশন ওয়াচ, জাতিসংঘের ইউএনডিপি, ইউনেস্কো ইত্যাদি।

এনজিওর কার্যক্রম

এনজিওগুলো সামাজিক উন্নয়নে নানাবিধ কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। এর কার্যক্রমগুলোর মধ্যে নিম্নোক্ত কর্মসূচি উল্লেখযোগ্য।

  • মানব সম্পদ উন্নয়ন
  • স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম
  • জেন্ডার, মানবাধিকার ও আইনি কার্যক্রম
  • ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম
  • শিক্ষা কার্যক্রম।

চাকরির ক্ষেত্র

চাকরির ক্ষেত্র হিসেবে এনজিওগুলো একটি বড় মাধ্যম। যদিও সব এনজিও স্থায়ীভাবে খুব কম সংখ্যককেই নিয়োগ দিয়ে থাকে। তবে বিশেষ পরিকল্পনা, প্রোগ্রামে, ক্যাম্পেইনের সময় অস্থায়ী ভিত্তিতে জনবল নিয়ে থাকে। এনজিও প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যেমন- ব্য্রাকের ব্র্যাক ব্যাংক, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি; গ্রামীণ ব্যাংক ইত্যাদিতেও রয়েছে ক্যারিয়ারের সুযোগ। দেশের ক্রমবর্ধমান শিক্ষিত যুবসমাজের বিপরীতে চাকরির ক্ষেত্র ততটা সম্প্রসারিত নয়। দুর্নীতি, সমন্বয়হীনতা, রাজনৈতিক মেরুকরণের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন উৎপাদনশীল প্রতিষ্ঠান বন্ধ অথবা সঙ্কোচনের ফলে তৈরি হচ্ছে বেকার সমস্যা। এ সমস্যা সমাধানে সরকারের পাশাপাশি এনজিও সেক্টর বাংলাদেশে সম্ভাবনাময় কাজের ক্ষেত্র তৈরিতে সক্ষম হয়েছে। যদিও এনজিওতে কাজ করার ব্যাপক কোনো ক্ষেত্র সেভাবে এখনো তৈরি হয়নি। তবে এটা বলা যায় ভবিষ্যতে এসব এনজিওতে ব্যাপকভিত্তিক পদ তৈরি হবে যা হবে চাকরির সবচেয়ে বড় বাজার

প্রয়োজনীয় যোগ্যতা

যে কোনো প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে যোগ্যতার বিকল্প নেই। এখানে কাজ করতে হলে দরকার মানসিকতা, ধৈর্য, সাহস, পরিশ্রমী মনোভাব, সমাজব্যবস্থা সম্পর্কে জানা। গ্রামীণ অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা মৌলিক একাউন্টিং ব্যবস্থাপনাগত জ্ঞান ও দক্ষতা, কম্পিউটারে দক্ষতা, রিপোর্টিং, উপস্থাপন দক্ষতা, উপস্থিত বুদ্ধি, অভিযোজনশীলতা এবং চ্যালেঞ্জ গ্রহণের অদম্য ইচ্ছা।
নিয়োগের ক্ষেত্রে এনজিওগুলোও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতই পদ্ধতি অনুসরণ করে থাকে। যেমন-Online-এ বিজ্ঞপ্তি। এক্ষেত্রে চাকরির যেসব ওয়েবসাইট রয়েছে সেগুলোতে এবং পত্র-পত্রিকায়ও জনশক্তি নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে থাকে। Email-এর মাধ্যমে CV দিয়ে বা সরাসরি CV দেয়ার মাধ্যমেই তার চাকরি-পরীক্ষা এবং ভাইভা নিয়ে থাকে।

সম্মানী

এনজিওতে কাজের সম্মানী মোটামুটি ভালো। এখানে পার্টটাইম জব করার সুযোগও রয়েছে। কেউবা কাজের সময়ানুযায়ী সম্মানী নির্ধারণ করে থাকে। এনজিওতে ক্যারিয়ার গড়তে বাংলাদেশেই ১০,০০০ টাকা হতে ৮০,০০০ টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব। বড় বড় এনজিওগুলোতে বাংলাদেশে আপনার পারফরম্যান্স ভালো থাকলে আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন দেশেও কাজের ক্ষেত্র খুলে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে আপনার আয় এর কয়েকগুণও হতে পারে। তবে সফলভাবে এনজিওতে ক্যারিয়ার গড়তে গুরুত্বপূর্ণ চারটি দক্ষতার প্রয়োজন।

ভালো উপস্থাপন কৌশল

এনজিওতে কাজ করতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ভালো উপস্থাপন কৌশল। এনজিওদের টার্গেট গ্রুপ বা তৃণমূল পর্যায়ের জনগণকে সংস্থার কার্যক্রমে উদ্বুদ্ধ করানোর জন্য যে সকল কার্যক্রম গ্রহণ করা হয় তার প্রত্যেকটিতেই ভালো উপস্থাপন জানা প্রোফেশনাল। আপনি আপনার উপস্থাপনের মাধ্যমে প্রকৃত ম্যাসেজটি টার্গেটগ্রুপের কাছে কতটা সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে পারছেন আর তারা সেটা যথাযথভাবে বুঝলো কি না তার ওপরই পরিমাপ হয় আপনার এ যোগ্যতা। তবে আপনার চিন্তাভাবনাগুলো Logically বিন্যস্ত হতে হবে। প্রত্যেকটির যৌক্তিক ব্যাখ্যা থাকবে। আপনাকে হতে হবে উন্নয়নমূলক চিন্তাবিদ ও বিজ্ঞানমনস্ক।

ভালো লেখার ক্ষমতা

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ যোগ্যতা হলো ভালো রাইটিং স্কিল। ডাটা অ্যানালাইসিস, রিপোর্টিং মূল্যায়ন ইত্যাদির জন্য ভালো লিখিত উপস্থাপনার বিকল্প নেই যে কোনো এনজিওতে প্রোজেক্ট প্ল্যানিংকে লিখিতভাবে উপস্থাপনার জন্য।
এনজিওর পদের ধাপ ও নিয়োগ
সফল এনজিও প্রোফেশনালরা তাদের নিজ ক্ষেত্রে ক্যারিয়ার গড়ার জন্য কোনো না কোনভাবে নিম্নের ধাপগুলোর মধ্যেই নিয়োজিত থাকেন। এনজিওতে কাজের প্রধান ধাপগুলো যথাক্রমে-

  • প্রকল্প সনাক্তকরণ
  • পরিকল্পনা
  • বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ
  • মূল্যায়ন ও গবেষণা
  • রিপোর্টিং
  • পুন:পরিকল্পনা

কাজগুলো সুষ্ঠুভাবে করার জন্য এনজিওগুলোতে প্রধানত যে পদ রয়েছে তা হলো-

  • চেয়ারম্যান
  • পরিচালক পর্ষদের অধীনে পরিচালকবৃন্দ
  • গবেষণা পর্ষদের অধীনে গবেষকবৃন্দ
  • প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা
  • এইচ আর ম্যানেজার
  • জনসংযোগ কর্মকর্তা
  • প্রোজেক্ট ম্যানেজার
  • প্রোগ্রাম ম্যানেজার
  • কর্মসূচি সংগঠক।

প্রোজেক্টের সুন্দর উপস্থাপন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বিভিন্ন ডোনার এজেন্সি এসব প্রোজেক্ট প্রোপোজাল দেখেই সাহায্য দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে ইংরেজিসহ ভালো অনুবাদও গুরত্বপূর্ণ। রিপোর্ট লেখাসহ বড় সমস্যাকে ছোট করে বুলেট পয়েন্টে তুলে ধরা জানতে হবে।

টিমওয়ার্ক

যে কোনো এনজিওর সাফল্য নির্ভর করে এর টিম ওয়ার্কের ওপর। টিমওয়ার্ক মূলত একই উদ্দেশ্যে একটি সংঘবদ্ধ কর্ম। প্রকল্প ব্যবস্থাপককে এজন্য তার টিমের ব্যাপারে সজাগ থাকতে হয়। টিম ভালো করলেই প্রোজেক্ট আউটপুট ভালো হবে। আর টিম খারাপ করলে প্রোজেক্টে এর বিরূপ প্রভাব পড়বে। এজন্য প্রকল্প ব্যবস্থাপককে সংস্থার মিশন-ভিশনের সঙ্গে প্রকল্পের যোগসূত্র সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা দিতে হয় তার টিমকে। সবাই যাতে একই উদ্দেশ্যে সমানভাবে নিজের দক্ষতাকে কাজে লাগাতে পারে তার জন্য নিতে হয় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। টিম ওয়ার্কের মাধ্যমে প্রকল্পকে কাজে পরিণত করতে একদল কর্মীর সম্মিলিত প্রয়াস থাকে।
এনজিওর জন্য আরেক গুরুত্বপূর্ণ যোগ্যতা হলো নেতৃত্বের গুণাবলী। তবে একাডেমিক যোগ্যতার ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই অনার্স বা ডিগ্রিধারী হতে হবে। কিছু বড় বড় এনজিও’র ফান্ড রেইজিং নামে পৃথক বিভাগও থাকে যারা সংশ্লিষ্ট এনজিও’র ফান্ড সংগ্রহের জন্য কাজ করে। বাংলাদেশে হাতে গোনা কয়েকটি এনজিও স্থানীয় সম্পদের ওপর ভিত্তি করে পরিচালিত হয়ে থাকে। বাকি অধিকাংশ এনজিওই পরিচালিত হয় বাইরের দাতা সংস্থাগুলোর আর্থিক অনুদানে। আবার কিছু আন্তর্জাতিক এনজিও বাংলাদেশে তাদের কান্ট্রি অফিসের মাধ্যমে সরাসরি বাস্তবায়ন করে থাকে। তবে ফান্ড পেতে হলে দাতারা প্রথমেই বিবেচনা করেন এ ফান্ড কাজে লাগানোর সক্ষমতা আছে কি-না। কোন দাতার কাছে প্রোজেক্ট প্রোপোজাল সাবমিট করলেন, আপনার পরিকল্পনাও দাতাদের পছন্দ হলো, কিন্তু তারা তখন চিন্তা করতে থাকে আপনার এনজিওর সক্ষমতার কথা;তাদের অর্থ কতোটা নিরাপদ ও ফলপ্রসূ। তবে দাতারা প্রথমে ছোট ফান্ডের বিষয়টিকে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকে। এরপর সফলভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারলে পুনরায় বড় অর্থ সাহায্য আসতে পারে।
দাতারা আপনার এনজিওর প্রকল্প ব্যয় ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যয় নিয়েও আগ্রহী। অর্থাৎ তারা দেখে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো ও প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে কতটা ভারসাম্য আছে। এ জায়গাতেই আপনাকে চমক দেখাতে হবে।

এনজিও’র সম্ভাবনা

বাংলাদেশের মত অনুন্নত দেশসমূহে এনজিওগুলোর কাজ করার বিশাল ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশগুলোতে দাতা সংস্থাগুলো সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য এনজিও পরিচালনার ওপর জোর দিচ্ছে। ১৯৯৯-এর তথ্যমতে দেশী এনজিও ১২৮০, বিদেশী এনজিও ১৪৯ এবং বিদেশী সাহায্যপুষ্ট এনজিও প্রকল্পের সংস্থা ৬,৪২৪টি। এই বিপুল সংখ্যক এনজিওতে কাজ করছে বিপুল জনশক্তি। প্রতিদিনই কাজের সুযোগ তৈরি হচ্ছে দক্ষ ও অদক্ষ জনগোষ্ঠীর। এনজিও’র বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য যে জনশক্তির প্রয়োজন তার চাহিদা পূরণ করা হচ্ছে স্থানীয় জনগোষ্ঠী থেকে। কাজেই বাংলাদেশের শিক্ষিত, দক্ষ, তরুণ তরুণীদের জন্য কাজের বিশাল দুয়ার খুলে গেছে। এখন সরকারি বেসরকারি সংস্থাগুলোর পরে এনজিওগুলোই হয়ে উঠেছে দক্ষ জনশক্তির গন্তব্য। বাংলাদেশের এনজিওর ভূমিকা যতই বিতর্কবিদ্ধ হোক, তার্কিকেরা এটা স্বীকার করতে নিশ্বয়ই পিছপা হবেন না যে, আমাদের কর্মসংস্থানে এনজিও-ও কিছুটা সহায়ক।

প্রতিষ্ঠা করতে পারেন আপনিও

বেসরকারি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ শুরু করতে হলে প্রথম ধাপ হলো অনুমতি গ্রহণ বা বৈধতা অর্জন। বাংলাদেশে এনজিওদের গঠনগত আইনী বৈধতার জন্য বিধিবদ্ধ সংস্থা হলো সমাজসেবা অধিদপ্তর, সমবায় অধিদপ্তর, NGO Affairs Bureau এবং Joint Stock Company উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানের প্রচলিত স্ব-স্ব নিয়ম-নীতির পদ্ধতিগত পরিমাপের আলোকে সংশ্লিষ্ট কর্র্তৃপক্ষ তাদের আইনগত বৈধতা প্রদান করে থাকে। উল্লেখ্য যে, বৈদেশিক কোনো আর্থিক ও কারিগরী সাহায্য সহযোগিতা পেতে হলে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট এনজিও’কে NGO Affairs Bureau হতে রেজিস্ট্রার হতে হবে বা রেজিস্ট্রেশন থাকতে হবে। Co-Operative Society এবং Voluntary Organization হতে হলে অবশ্যই প্রথমে সমবায় অধিদপ্তরের রেজিস্ট্রার হতে হবে।

অর্থ পাবেন কোথায়?

যে কোনো এনজিও’র টিকে থাকাটা নির্ভর করে বৈদেশিক সাহায্য ও নিজস্ব সম্পদের ওপর। বাংলাদেশের অধিকাংশ এনজিও মূলত দাতাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে তাদের সুবিধাভোগীদের সেবা দিয়ে থাকে। এ সেবার মেয়াদ বিভিন্ন প্রকল্পের ছকে বাঁধা থাকে। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে সেবার সমাপ্তি ঘটে। তখন আবার খুঁজতে হয় নতুন নতুন প্রোজেক্ট। বিকল্প কোনো ফান্ড।