পড়াশোনাকে আনন্দদায়ক করে তুলবেন যেভাবে

এস এম মাহফুজ

কোনো কিছুতে আনন্দ পাওয়ার মধ্যেই লুকিয়ে আছে সফলতা। যে যে কাজে আনন্দ পাবে সে সে কাজে সফল। কর্মজীবনে studyমানুষের কাজের ক্ষেত্র অনেক থাকলেও শিক্ষার্থীদের আসল কাজ একটাই- পড়াশোনা। যে শিক্ষার্থী এ পড়াশোনাকে আনন্দদায়ক করে তুলতে পারবে সে শিক্ষার্থীই সফল। পড়াশোনার মাধ্যমে শিক্ষার্থীর সফলতা, তার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের হাতছানি, তাই এ পড়াশোনাকে আনন্দদায়ক করার কোনো বিকল্প নেই।

ইতিহাস কী বলে :

ইতিহাস বলে, যারাই কোনো বিষয়ে সাফল্যের উচ্চ শিখরে পৌঁছেছিলেন, এর পেছনে কারণ ছিল একটা-ই, কাজের প্রতি ভালোবাসা।
এডিসনকে ধরুন যিনি বৈদ্যুতিক বাতি আবিষ্কারের জন্য সহস্রাধিকবার চেষ্টা করে সফল হয়েছিলেন। কারণ একটাই, তিনি এটাকে নিয়েছিলেন একটা গেইম বা খেলা হিসেবে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রত্যহ খুব ভোরে উঠতেন এবং লেখা শুরু করতেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে লিখতেন। লেখাই ছিল তার আনন্দ এজন্য তিনি মোটেও বিরক্ত হতেন না।
বুসেলি একজন বিখ্যাত মার্শালার। তার কাছে কারাতে করাই ছিল বিরাট আনন্দের বিষয়। মূল কথা হচ্ছে আনন্দের সাথে কোনো কাজ না করলে সে বিষয়ে যেমন সফলতা আসে না তেমনি আবার সৃজনশীলতাও প্রকাশ পায় না।
এখানে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা। যখন কোনো শিক্ষার্থী একটি বিষয়কে আনন্দদায়ক বিষয় বলে ধরে নেয় তার জন্য বিষয়টি আয়ত্ত করা সহজ। আবার কোনো বিষয়ে বিরক্তি এসে গেলে সেটিই মনে হয় সবচেয়ে কঠিন বিষয়।
তাই এ পড়াশোনাকে কিভাবে আনন্দদায়ক করে তোলা যায় তার টিপস প্রদানই এবারের আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য।

বইয়ের সংস্পর্শে থাকুন :

পাঠকে আনন্দদায়ক করে তুলতে আপনাকে সবসময় বইয়ের সংস্পর্শে থাকতে হবে। অনেক শিক্ষার্থী আছে যারা দিনের পর দিন কিংবা সপ্তাহের পর সপ্তাহ ধরে পাঠ্য বই পড়ে না। যখন পরীক্ষা চলে আসে তখন টনক নড়ে। তখন অল্প সময়ে তাকে পুরো বিষয়টি পড়তে হয়। ফলে দেখা যায় সহজ বিষয়ও তার জন্য জটিল হয়ে দাঁড়ায়। এসব শিক্ষার্থী যদি তাদের বছরের/সেমিস্টারের/ইয়ারের শুরু থেকেই নিয়মিত পড়াশোনা করতো তবে পরীক্ষার সময় আর বিপত্তি ঘটতো না। আনন্দেই সে পড়তো।

মনে সর্বদা লক্ষ্য/ উদ্দেশ্যকে লালন করুন :

যখন আপনি ভাববেন জীবনে আপনাকে কী করতে হবে, আপনাকে কোথায় পৌঁছতে হবে বা আপনার লক্ষ্যই বা কী? সেটি আপনাকে কাজ করতে আনন্দ দিবে। ধরুন আপনি ভাবছেন এ পড়াটি আপনার পরীক্ষায় ভালো পাশের জন্য আবশ্যক আর সে পাশটা আপনার ক্যারিয়ারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তখন হয়তো পড়াটি পড়তে আপনার ভালো লাগবে।

পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন :

পাঠ্য বই, সহায়ক বই কিংবা অন্য যে কোনো বই। যখন আপনি সব বই পড়তে থাকবেন। পড়াশোনার এ বৈচিত্র্যতো আপনার পাঠ্যাভ্যাসকে বৃদ্ধি করবে নিঃসন্দেহে। এভাবে সব পড়তে পড়তে আপনি যখন অভ্যস্ত হয়ে উঠবেন, তখন পড়াশোনাটা আপনার জন্য আর বিরক্তির বিষয় থাকবে না, পড়াশোনার মাঝে খুঁজে পাবেন এক নির্মল আনন্দ; পড়তেই ভালো লাগবে আপনার।

আত্মবিশ্বাসী হোন :

ব্যক্তিগতভাবে আপনি আত্মবিশ্বাসী হোন। আপনার বিশ্বাসকে দৃঢ় করুন-আমি জীবনে সফল হবোই। আর এই সফলতা আসবে পড়ার মাধ্যমে। পড়াশোনার মাধ্যমে যখন আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়বে। আপনি যখন পড়ার মাধ্যমেই পাবে সফলতার হাতছানি, তখন বাধ্য হয়েই আপনি পড়বেন। সে পড়া হবে মনোযোগের সাথেই। অর্থাৎ আপনার এ আত্মবিশ্বাসই পড়াকে আনন্দদায়ক করে তুলবে।

নোট নিন/গুরুত্বপূর্ণ বিষয় চিহ্নিত করুন :

অনেক শিক্ষার্থী নোট নিতে চায় না। এটা তাদের দক্ষতাকে প্রভাবিত করে। নোট না নিয়ে কিংবা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় চিহ্নিত না করে তারা পুরো অধ্যায়টি পড়ে অনেক সময় নষ্ট করে। ফলে পড়াশোনায় বিরক্তি এসে যায়। শিক্ষার্থী পুরো বিষয়টির সংক্ষিপ্ত নোট করতে পারে। নোটে ইচ্ছে করলে তার নিজস্ব মতামত কিংবা বিষয়টি নানা এঙ্গেল থেকে দেখা যেতে পারে। এভাবে গুরুত্বপূর্ণ এ আদর্শ নোট পড়াকে আনন্দদায়ক করে।
কোনো শিক্ষার্থী যখন এভাবে পড়ার আনন্দ খুঁজে পায় তার পড়া সার্থক।